বেদ থেকে বটগাছ
বেদে লেখা আছে—
প্রকৃতিই ধর্ম, প্রকৃতিই জীবন।
অগ্নি শুধু পূজার আগুন নয়,
সে হলো আলো, তাপ, শক্তি—
যার ছোঁয়া ছাড়া জীবন অসম্ভব।
সূর্য কেবল আকাশের দীপ নয়,
সে প্রাণের উৎস,
সে হিমালয়ের চূড়া ছুঁয়ে
ধানের শিষে সোনালি রং ছড়িয়ে দেয়।
চন্দ্র শুধু রাত্রির শোভা নয়,
সে হলো মায়ের দুধের মতো স্নিগ্ধতা,
ক্লান্ত পৃথিবীর চোখে শীতলতার প্রলেপ।
এই বেদের দর্শন থেকেই জন্ম নেয়
প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা।
তাই নদী হলো গঙ্গা,
পাহাড় হলো কৈলাস,
গাছ হলো পূজার আসন।
আর সেই গাছের ভেতর
সবচেয়ে পবিত্র প্রতীক হলো বটগাছ।
বটগাছ শুধু ছায়া দেয় না,
সে ২৪×৩৬৫ অক্সিজেন বিলায়,
নিঃশ্বাসে প্রাণ দেয় মানুষের,
অসীম শেকড় ছড়িয়ে ধরে রাখে মাটিকে।
বটগাছ হলো অমরত্বের প্রতীক,
যার ডাল ছড়ায় আকাশে,
যার শিকড় নামে মাটিতে—
যেন বলে যায়,
"উচ্চতায় যেতে হলে
শিকড়ে থাকতে হবে দৃঢ়ভাবে।"
তাই হিন্দু ধর্ম বটগাছকে দেবতা মানে।
কারণ এখানে কোনো কিছুই তুচ্ছ নয়,
এক ফোঁটা জলও পূজ্য,
একটি গাছও দেবতুল্য।
বেদ থেকে বটগাছ—
এ এক অন্তহীন যাত্রা।
যেখানে ধর্ম মানে কেবল মন্ত্র নয়,
ধর্ম মানে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা।
যেখানে পূজা মানে অর্ঘ্য নয়,
পূজা মানে কৃতজ্ঞতা।
যতদিন বেদে শব্দ থাকবে,
যতদিন বটগাছে সবুজ থাকবে,
ততদিন হিন্দু ধর্ম বেঁচে থাকবে—
মানুষের নিঃশ্বাসে,
প্রকৃতির চিরন্তন বন্ধনে।