Boul Batas - 2 in Bengali Poems by Joy Bandyopadhyay books and stories PDF | বউল বাতাস - 2

Featured Books
  • DIARY - 6

    In the language of the heart, words sometimes spill over wit...

  • Fruit of Hard Work

    This story, Fruit of Hard Work, is written by Ali Waris Alam...

  • Split Personality - 62

    Split Personality A romantic, paranormal and psychological t...

  • Unfathomable Heart - 29

    - 29 - Next morning, Rani was free from her morning routine...

  • Gyashran

                    Gyashran                                Pank...

Categories
Share

বউল বাতাস - 2

নন্দিনী ভালো আছো!
বৃষ্টি হচ্ছে ওখানে?
অসীমদা সেই লাল গাড়িটা চালায় আজকাল!
সৌরভ গাঙ্গুলী খেলছে এখনো?
না কি মেয়ে নিয়ে ব্যস্ত!
কতো বড়ো হলো হিমু?
পামেলা দি কি এখনো চাকরি করে!
আচ্ছা কফি হাউস এ এখনো
২ টাকা বান্ডিল বিড়ি দেয়?
সল্টলেকের রোস্টেড বিড়ি!
তমালটা কি ঝগড়াটাই না করতো
কাউন্টার এ বিশুদা কিন্তু সবার খেয়াল রাখতো
চারটের বেশি বিড়ি কাউকে খেতে দিতো না।
তমালটার শেষে লিভার ক্যান্সার হোলো,
আচ্ছা বিড়ি খেলে কি লিভার ক্যান্সার হয়! কে জানে!
তুমি এখনো আউটরাম ঘাটে যাও!
তোমার সেই হলুদ শাড়ীটা পরে?
সেই সেবার সরস্বতী পুজোতে কিনেছিলে
মনে আছে তোমার কি বায়নাটাই না করেছিলে
পুরো গড়িয়াহাট ঢুঁ মেরে
তোমার ওই হলুদ শাড়ী পাওয়া গেছিলো
প্যাকেট টা হাতে নিয়ে তুমি
অশ্বমেধ বিজেতা ঘোড়ার মতো
গ্রীবা উঁচু করে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়েছিলে
চোখে তোমার অহংকার এর হাসি
চুইয়ে চুইয়ে পড়ছিলো
ট্রামগুলো সব কালার করেছে?
না পুরোনোই চালাচ্ছে!
মনে পড়ে সেই শীতের ভোরে
তোমাকে নিয়ে ট্রামে চাপা!
চলন্ত ট্রাম থেকে নামা আর ওঠার জন্য
কি বকুনিটাই না দিতে তুমি
সেইবার একটুর জন্য পা স্লিপ করলো
আমার গলা জড়িয়ে ধরে বলেছিলে
'ঋ' তোমার কিছু হোলে আমি কোথায় যাবো!
যাওয়াটা তো তোমারই হাতে ছিল নন্দিনী!!
শোনোনা! রিমা কাকিমা আচার তৈরী করে আর!
কাকিমাকে দেখলে বোলো
আমি আর আচার খেতে পারি না
ডাক্তার মানা করে দিয়েছে
কাকিমার আচার কিন্তূ এখনো
খুব পছন্দ আমার
লেবুতলার চায়ের দোকানটা
কি আজও চলে?
বাবলু মানস বিতুন সবাই আসে ওখানে!
ওদের দেখলে বোলো আমার
আর ক্যারম খেলা হয় না
ডানহাতটা পুরোটাই বাদ গেছে
খেলতে হলে আবার শূন্য থেকে
শুরু করতে হবে;
বাবলুর সাথে বাজি ধরা ম্যাচটা
আর খেলা হলো না-
এখানে হালকা বরফ পড়ছে জানো!
আমার কিন্তূ আর ঠান্ডা লাগে না
এইখানে শুইয়ে দিয়েছে ওরা আমাকে
এখান থেকে সব দেখতে পাই
কিন্তূ উঠে আসতে পারি না
রবিবার একটা বুড়ো ভিখারি
ফুল রেখে যায় আমার পাশে
আমার অফিসের নীচে
রোজ ওকে ১০ টা টাকা দিতাম।
গরম কচুরী খেত বুড়োটা
এখন বোধকরি ঋণ শোধ করছে!
একটু করে কাঁদবে আমার পাশে বসে
পাগল যেন লোকটা!
আচ্ছা! তুমি তো তুমি খুব ভালোবাসতে না জুঁই ফুল!
এখনো মাথায় জুঁই ফুল বাঁধো?
ওই গন্ধটাতে তোমাকে দারুন লাগতো জানো!
নন্দিনী! মনে আছে আমাদের সেই প্রথম বেড়ানো!
মানসী নদীর ঘাটে
তুমি টাল খেলে নৌকো থেকে
আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে
বলেছিলে ঋষভ তোমাকে খুব ভালোবাসি |
আমার ভিসা পাওয়াতে খুব রাগ করেছিলে তুমি
যেদিন আমাকে ছাড়তে এলে এয়ারপোর্ট এ
নন্দিনী! তোমার চোখ ভরা জল ছিল
কি আশ্চর্য বলতো আমি তো সেদিন বুঝিইনি
তুমি লুকিয়ে গ্লিসারিন দিয়েছিলে চোখে
আমি কত বোকা না গো!
তুমি আমার হাতটা ধরে বললে,
তোমাকে কিন্তু চিঠি লিখবো
আমি বললাম পৌঁছে ঠিকানাটা পাঠিয়ে দেব
দিয়েছিলাম নন্দিনী
ঠিকানা আমার দিয়েছিলাম
আজও জানি না সেটা
তোমার কাছে পৌঁছোল না কেন!
হয়তো বসন্ত দার কোলে বসে তুমি খেয়ালই করনি
পাশ দিয়ে কাগজটা উড়ে গেলো কোথাও
নন্দিনী আমি কোনোদিন নাটক দেখিনি জানো!
তাই হয়তো তোমার
এতবড়ো নাটকটা ধরতেই পারলাম না!
তা হোক! তোমার মুখে হাসি থাকলে
আমি সব ভুলে যাই...আজও
তোমার লাল টুকটুকে ঠোঁটে
ওই হাসিটা আমার প্রাণ ছিল
শুনেছি তোমার নাকি
ফুটফুটে একটা ছেলে হয়েছে?
ওর নাম কি সৌরভ রেখেছ!
আউটরাম ঘাটে বসে
আমার কাঁধে মাথা রেখে বলতে...ঋষু!
ওই নামে তুমি আমায় ডাকতে...
আমাদের ছেলে হলে নাম রাখবো সৌরভ।
কি অদ্ভুত না নন্দিনী!
ছেলে তোমার হলো
কিন্তূ চোখ দুটো তার একদম
বসন্ত দার মতো বসানো।
নন্দিনী! একটা অনুরোধ রাখবে?
তোমার ছেলের একটা
ছবি পাঠাবে আমার জন্য!
ওর হাসিটা নিশ্চয় তোমারই মতো!
খুব ইচ্ছে করে আজও ওই হাসিটা দেখতে।
আচ্ছা আমার নতুন ঠিকানাটা দিই?
১২ নম্বর চার্চ লেন, ব্রাসিল স্ট্রিট, লন্ডন
ব্রাকেটে কবরখানা ৫৪ লিখে দিও
ওটাই আমার ঠিকানা এখন
আমি এখন ওখানেই শুয়ে থাকি
ঠান্ডা পাথরের বাক্সে।
ভালো থেকো নন্দিনী...
ইতি তোমার ঋষু।।



রচনা কাল : জুলাই ২০১৬

[কম বয়সের এরকম কতো প্রেম সময়ের অন্তরালে নির্বাক নিশ্চুপ ধুপের মতো পুড়ে পুড়ে শেষ হয়ে যায়। যার সুবাস ছড়িয়ে থাকে বাতাসে তার কায়াহীন অস্তিত্ব নিয়ে। এমন সব নির্মল সম্পর্কের প্রতি উৎসর্গিত আমার এই সামান্য প্রচেষ্টা]