Boul Batas - 6 in Bengali Poems by Joy Bandyopadhyay books and stories PDF | বউল বাতাস - 6

Featured Books
  • DIARY - 6

    In the language of the heart, words sometimes spill over wit...

  • Fruit of Hard Work

    This story, Fruit of Hard Work, is written by Ali Waris Alam...

  • Split Personality - 62

    Split Personality A romantic, paranormal and psychological t...

  • Unfathomable Heart - 29

    - 29 - Next morning, Rani was free from her morning routine...

  • Gyashran

                    Gyashran                                Pank...

Categories
Share

বউল বাতাস - 6

শিল্পী

অর্ধেক মুখ আঁকা সামনের ক্যানভাসে
বাকি অর্ধেক আমার মনে জট পাকিয়ে আছে
তোমার এক চোখে অতল পদ্মপুকুরের চাহনি
আর এক চোখের ভাষা এখনও অস্ফুট
আকাশের নীল নিয়ে দিয়েছিলাম প্রেক্ষাপটে
তারাগুলো হারিয়েছে তোমার বুকের শাড়ীর ভাঁজে
অস্বচ্ছ ঠোঁটে বাঁকা কুহেলিকা হাসি
সমস্ত শরীর এলোমেলো শব্দ দিয়ে ঢাকা
বসন্তের হা-হুতাশ তবুও আপ্রাণ চেষ্টা করে
বীথিকার মর্মর ধ্বনিতে সুর খুঁজে পেতে।


সপ্তসুর রঙে মিশে ঘন গাঢ় অন্ধকার
কিছুটা থেকে যায় মনে, বাকি শুকায় ব্রাশের মুখে
যতই চেষ্টা করি আঁকতে তোমায়
বারবার বদলে যাও ক্যানভাসে, মুহূর্তের সাথে।


বেঁচে আছি একমনে

বেঁচে আছি একমনে
ভালোলাগার অনুভূতিতে
নিদারুন যন্ত্রনা ভালোবাসার
আশা তাও ছাড়ে না পিছু।


পরিমিত আসা যাওয়া
মাপকাঠিতে কথা বলা
বাঁকা পথে হারিয়ে যাবার হাতছানি
আশা তাও ছাড়ে না পিছু।


চেনামুখে বলিরেখা
ধোঁয়াশাতে নিজের প্রতিচ্ছবি
উড়ো চিঠি কামনাবিতুর আলিঙ্গনের মায়াজাল
আশা তাও ছাড়ে না পিছু।


একাকিত্বের সীমাহীন রোজনামচা
পাণ্ডুলিপি ঘেঁটে অযাচিত অধিবাস
আয়নাতে ছায়া দেখে
নিজের নগ্নতা একটু একটু করে চেনা
আশা জানি তাও ছাড়বে না পিছু।


তেনার দূত

সময় কাটে অন্ধকারে
টুকরো কাগজ ছিঁড়ে ;
বাক্সবন্দী শুক্রকীট
চিলেকোঠার ঘরে -
যুক্তি তক্কো মুষ্টিবদ্ধ
মনের ফুর্তি গড়ের মাঠ,
চায়ের কাপে দারুন তুফান
দাদুর লাঠি ছাতার বাঁট।
ভক্তি টক্তি সাচ্চা কল্প
তিলক দিয়ে জমজমাট -
বটতলাতে বদ্যিগিরি ,
হুকুম তামিল রাজার হাট।
গিনির ওপর জলের খোলশ
তামার মূল্য দাঁতকপাট ,
বুকের ওপর পরশ পাথর,
তেনার দূতে কাটবে গাঁট ।

ভোজবাজি

মৃত্যু তোমায় আজ আস্তিনে রেখে খেলি
বেদের বাঁশিতে ফনা দুলিয়ে ভোজবাজি যেন
নিঃশঙ্ক নিষ্কম্প হাতে সময়ের বাজিমাত।।


জরিবুটি আঁকিবুকি বিষ ফলের গাছ
শিরোস্ত্রাণি পরিমার্জনার নিষ্কলুষ রূপায়ণ
ভৌতিক বা অভৌতিক সবটাই তরঙ্গায়িত উপস্থাপন
মনের অনুভূতি নিয়ে চতুষ্কৌণিক পরিবেশন।।


ধূমায়িত প্রেক্ষাপটে রঙিন জলছবির ছাপ
মরালমতি সরলরেখা শতচেষ্টাতেও সর্পিল
বুনোট জালের বেড়ি ভাঙার প্রচেষ্টা অনাবিল
অভিধানের শব্দ খুঁজে জলযুদ্ধ অন্তরিল।।


নির্বাসিত মননশীলতা নিদারুন বেদনাহত
নিশ্ছিদ্র প্রহরাধীন শ্বাপদসঙ্কুল প্রাসাদে
স্বপ্নাবিষ্ট পরশে নিদ্রামগ্ন চিরায়ত আস্বাদে।।


নির্ভীক ডানা মেলে

নির্ভীক ডানা মেলে, সুখী এই ডাঙা ছেড়ে
যাবো না উড়ে আর উন্মুক্ত আকাশে-
অশ্রুত কাহিনী আমার যাবো না রেখে
এই শুকনো বটের পাতা আর কোমল বাতাসে
কামরাঙা আস্বাদনে মুছে যাবে একদিন সব পরিহাস,
স্নিগ্ধ ভোরের মিঠে রৌদ্র স্নাত অশ্বত্থের আশ্বাস
ভুলে যাবে ক্রমাগত আমার অস্তিত্ব সুদূর ভবিষ্যতে
ঝরাপাতার একমুঠো স্বপ্ন সাদা ধুলোর সাথে,
অবিরল ঘাস শুধু থেকে যাবে লাল মাটি কাঁকরের পাশে
প্রশ্বাসের আঘ্রাণ মিলিয়ে যাবে কোনো বিরহী নিঃশ্বাসে-
আমার সব গান আর সুর দেব বিষন্ন চড়ুইয়ের ঝাঁকে
এই পথ এই গলি ছেড়ে আমি মিশে যাবো অতীতের বুকে।

অপার্থিব নদীস্রোতে

শান্ত দিঘীর জল পূর্ণ শালুক পাতায়
সাপ আর প্রজাপতির খেলা সুর্যাস্তের আভায়-
আলপথে ঘরে ফেরা পাটান বহুদূর ,
রাখালিয়া বাঁশিতে বাসি মেঠো সুর।


গতজন্মের ঋণ ছিল পারানী বিনা না'য়
মহাজনী সুদ বেড়ে ঘর বাঁচানো দায়-
প্রতিক্ষিত শৃঙ্খলাতে নিয়মনিষ্ঠ মাপ,
তবুও মনে সংশয় লিঙ্গ নিঃসৃত পাপ।


অপার্থিব নদীস্রোতে ঢেউগোণার ভার
ঘুর্ণাবর্ত অলীকধারায় গূঢ় অধিকার-
কুহকজালে ধ্বংসমুখী ভিজে কাঠে উই,
পাঠশালাতে নামতাপড়া এক এক্কে দুই।


বাসনা

ইচ্ছে করে আকাশেতে মেঘ হয়ে উড়ি,
ডানাতো নেই ভাবি মনে -
কেমনে তা করি।


ইচ্ছে করে ঘুড়ি হয়ে আকাশে যাই উড়ে,
ঘুরে বেড়াই ইতস্ততঃ -
সারা আকাশ জুড়ে।


ইচ্ছে করে পাখি হয়ে যাই উড়ে ওই আকাশে,
যেখানে সব মেঘের দল -
ইচ্ছেমতো ভাসে।


দিনের শেষে প্রদীপ হয়ে জ্বলি ঘরের কোনে,
হয় না কিছুই সবই চাপা থাকে নিজের মনে।


সদগতি

তুমি কি কখনও স্বপ্নে দেখেছো?
আমি দেখেছি-
জমাট বাঁধা সাদা ধোঁয়ার বুক চিরে,
বল্গাহীন এক কালো ঘোড়া
অদৃশ্য কোনো চাবুকের ঘায়ে যেন,
প্রবল বেগে ছুটছে।


তুমি কি কখনও স্বপ্নে দেখেছো?
আমি দেখেছি-
ভীষণ এক ঝড়, প্রকৃতি মাতাল-
প্রাণ বাঁচাতে অসহায় এক হরিণ,
ছুটে পালাতে যেয়েও থমকে দাঁড়ায়
নিজের মরা বাচ্চার সামনে।


তুমি কি কখনও স্বপ্নে দেখেছো?
আমি দেখেছি-
পাহাড়ী উপত্যকায় উন্মুক্ত প্রান্তর,
সোনালী রোদ আর সবুজের সমারোহ,
মন কাঁপানো খুব চেনা এক সুরে
চাষী মেয়ের গলায় ধানবোনার গান


তুমি কি কখনও স্বপ্নে দেখেছো?
আমি দেখেছি-
গভীর রাতে চারিদিক সুনসান-
নিঃসঙ্গ শব্দহীন কবি এক লেখার টেবিলে,
সমস্ত মুখে নিদারুন অব্যক্ত যন্ত্রণার ছাপ,
বোধহয় ভালোবাসার সদগতি।।