The Curse of Navaria in Bengali Love Stories by Prabhakar Bhangar books and stories PDF | নভারিয়ার অভিশাপ

Featured Books
Categories
Share

নভারিয়ার অভিশাপ


নভারিয়া, চারটি শক্তিশালী রাজ্যে বিভক্ত এক দ্বীপ-রাজ্য, বহু শতাব্দী ধরে এক প্রাচীন অভিশাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল। এলভেন্ডার (পরীদের দেশ), ড্রাকসান (ড্রাগন ও যোদ্ধাদের রাজ্য), মাইরানথা (জাদুকরদের দেশ), এবং ভেলডোর (মানুষ ও ছায়াযোদ্ধাদের রাজ্য) - একসময় শান্তিতে বসবাস করত, কিন্তু অভিশাপ তাদের মধ্যে বিভক্তি আর ঘৃণা বুনে দিয়েছিল। এই বিভক্তির মূলে ছিল এক প্রাচীন অন্যায়, যা সময়ের সাথে সাথে কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছিল।
আলাইরা মুনরোজ, মাইরান্থার এক তরুণী জাদুকন্যা, তার কপালে জন্ম থেকেই এক রহস্যময়ী চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছিল। এটি ছিল 'চূড়ান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর সন্তান'-এর প্রতীক, যার হাতেই নির্ধারিত হবে নভারিয়ার ভাগ্য। আলাইরা ছিল অন্য জাদুকরদের থেকে আলাদা। তার জাদুতে ছিল এক গভীর, শান্ত শক্তি, যা সে নিজেও পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারত না।
রায়ান ছায়াতরঙ্গ, ভেলডোরের এক শক্তিশালী ছায়াযোদ্ধা। তার নীরবতা ছিল তার সবচেয়ে বড় অস্ত্র, আর তার হৃদয়ে ছিল অতীতের এক মর্মান্তিক ঘটনার ক্ষত, যা ভালবাসার প্রতি তার বিশ্বাসকে ভেঙে দিয়েছিল। সে ছিল ছায়াদের মধ্যে সবচেয়ে দক্ষ, তার গতি ছিল বিদ্যুতের মতো দ্রুত, আর তার লক্ষ্য ছিল অমোঘ।
অধ্যায় ১–৩: ভবিষ্যদ্বাণীর শুরু
মাইরান্থার প্রাচীন জাদুর গ্রন্থাগারে, ধুলোমাখা বইয়ের স্তূপের মধ্যে আলাইরা এমন একটি পাণ্ডুলিপি খুঁজে পেল যা তার জীবন বদলে দিল। এর নাম ছিল 'নভারিয়ার হৃদয়'। পৃষ্ঠা উল্টাতেই সে এক রহস্যময়ী প্রবচন খুঁজে পেল: "রক্তের বিনিময়ে আলোর জন্ম হয়, আর আলো থেকে ছায়া জন্ম নেয়, যা আবার আলোর পথ দেখায়।" এই বাক্যটি তার আত্মায় এক গভীর অনুরণন সৃষ্টি করল।
পাণ্ডুলিপিটি আরও বলল যে, তার কপালে থাকা চিহ্নটি 'চূড়ান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর সন্তান'-এর প্রতীক, যার জন্মই হয়েছে প্রাচীন অভিশাপ ভাঙার জন্য। আলাইরা প্রথমদিকে এই ধারণায় হতবাক হয়ে গেল। তার মতো একজন সাধারণ জাদুকন্যা কীভাবে এত বড় দায়িত্ব পালন করবে? কিন্তু পাণ্ডুলিপির প্রতিটি শব্দ যেন তার মধ্যে এক নতুন শক্তি সঞ্চার করছিল। তার পূর্বপুরুষদের ইতিহাস, মাইরান্থার জাদুকরদের আত্মত্যাগের কাহিনী, সব যেন তার চোখের সামনে ভেসে উঠল। সে অনুভব করল, এই ডাক অস্বীকার করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
অভিশাপের উৎস খুঁজতে গিয়ে আলাইরা জানতে পারল, বহু শতাব্দী আগে মাইরান্থা এবং ভেলডোরের মধ্যে এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছিল, যা এই অভিশাপের জন্ম দিয়েছিল। সেই যুদ্ধে একজন মহান জাদুকর এবং একজন শক্তিশালী ছায়াযোদ্ধা একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, এবং তাদের সংঘাতই নভারিয়াকে বিভক্ত করেছিল।
অধ্যায় ৪–৬: যাত্রার সূচনা
অভিশাপ ভাঙার জন্য একটি প্রাচীন হীরকের প্রয়োজন ছিল, যা 'অন্ধকারের পর্বত'-এর গভীরে লুকানো ছিল। এই হীরকটি কেবলমাত্র শুদ্ধ আত্মত্যাগের মাধ্যমে সক্রিয় হতে পারত। আলাইরা এই হীরকের সন্ধানে এক দুঃসাহসিক যাত্রা শুরু করল। তার প্রথম গন্তব্য ছিল ড্রাকসান, যেখানে ড্রাগনদের জ্ঞান এবং শক্তি এই হীরক খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারত।
পথে, ড্রাকসানের রুক্ষ পাহাড়ি পথ ধরে যেতেই তার সাথে দেখা হলো রায়ান ছায়াতরঙ্গের। রায়ান তখন একদল ডাকাতের হাত থেকে গ্রামের মানুষদের রক্ষা করছিল। আলাইরা তার শক্তি এবং দ্রুততায় মুগ্ধ হলেও, তার নীরবতা আর একগুঁয়েমি তাকে বিরক্ত করছিল। প্রথমদিকে তারা একে অপরকে সহ্য করতে পারল না। আলাইরার জাদুতে ছিল আলোর উজ্জ্বলতা, আর রায়ানের ছায়া ছিল গভীর। তাদের মধ্যে ছিল এক অদ্ভুত আকর্ষণ-বিকর্ষণ।
অন্ধকারের পর্বত পার হওয়ার সময় তারা এক বিশাল ড্রাগনের মুখোমুখি হলো। ড্রাগনটি এক প্রাচীন অভিশাপের কারণে ভয়ানক অসুস্থ ছিল, এবং তার হৃদয় ধীরে ধীরে পাথরে পরিণত হচ্ছিল। আলাইরা তার জাদুতে ড্রাগনের কষ্ট অনুভব করল এবং তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করল। রায়ান, যে প্রথমদিকে ড্রাগনের প্রতি সন্দিহান ছিল, সেও আলাইরার সহানুভূতি দেখে মুগ্ধ হলো। তারা দুজনেই মিলে ড্রাগনের হৃদয় রক্ষা করল, যা তাদের মধ্যে এক অপ্রত্যাশিত বন্ধন তৈরি করল। মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থানে একে অপরের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা আর বিশ্বাস বাড়তে লাগল। তারা বুঝতে পারল, তাদের দুজনের শক্তি একত্রিত হলে তারা যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে পারবে।
অধ্যায় ৭–১০: প্রেম ও প্রতারণা
অন্ধকারের পর্বত থেকে ফেরার পথে, হীরকটি হাতে নিয়ে, আলাইরা এবং রায়ান একে অপরের প্রতি এক গভীর আকর্ষণ অনুভব করতে লাগল। তারা তাদের দুঃসাহসিক অভিযানের প্রতিটি মুহূর্তে একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করছিল। তাদের মধ্যে এক নীরব প্রেম গড়ে উঠল, যা দুজনেই অনুভব করলেও মুখে স্বীকার করতে পারছিল না।
কিন্তু নভারিয়ার প্রাচীন জাদুস্তম্ভে পৌঁছানোর পর, হীরকটি যখন আলাইরার হাতে স্পন্দিত হলো, তখন তার মনে এক পূর্বজন্মের স্মৃতি ফিরে এল। সে দেখতে পেল, বহু শতাব্দী আগে সে একজন শক্তিশালী জাদুকর ছিল এবং রায়ান ছিল একজন পরাক্রমশালী ছায়াযোদ্ধা। তাদের মধ্যে ছিল এক গভীর প্রেম, কিন্তু যুদ্ধের ডামাডোলে রায়ানকে বিশ্বাসঘাতকতার অপবাদ দেওয়া হয়েছিল, এবং তার হাতেই আলাইরার (পূর্বজন্মের) মৃত্যু হয়েছিল। এই স্মৃতি আলাইরাকে হতবাক করে দিল।
একই সময়ে, রায়ানও জানতে পারল যে, তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছিল, তাদের সাথে আলাইরার রাজপরিবারের যোগ ছিল। এই তথ্য তাকে ক্রোধে উন্মত্ত করে তুলল। অতীতের ঘৃণা আর বর্তমানের প্রেম – এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে তাদের সম্পর্ক এক গভীর সংকটের মুখে পড়ল।
অধ্যায় ১১–১৩: বিশ্বাসঘাতকতা ও বিচ্ছেদ
অতীতের তিক্ত সত্য সামনে আসতেই তাদের বিশ্বাস ভেঙে গেল। আলাইরা নিজেকে প্রতারিত মনে করল, রায়ানও মনে করল যে তার পরিবারের প্রতি অন্যায়ের পেছনে আলাইরার পূর্বপুরুষদের হাত ছিল। তারা দুজনেই আলাদা পথে চলে গেল। রায়ান তার পুরনো ছায়া যোদ্ধাদের কাছে ফিরে গেল, আর আলাইরা মাইরান্থার জাদুর দুর্গে আশ্রয় নিল।
এই বিচ্ছেদের সুযোগে, প্রাচীন অভিশাপ আবার সক্রিয় হয়ে উঠল। নভারিয়ার চারটি রাজ্য – এলভেন্ডার, ড্রাকসান, মাইরানথা এবং ভেলডোর – একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল। আকাশে ড্রাগনরা গর্জন করে উঠল, পরীরা তাদের জাদুতে ভয়ংকর অস্ত্র তৈরি করল, জাদুকররা তাদের শক্তি প্রয়োগ করল, আর ছায়াযোদ্ধারা অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এল। নভারিয়ার আকাশ রক্তবর্ণ ধারণ করল।
অধ্যায় ১৪–১৬: আত্মত্যাগ
চার রাজ্যের যুদ্ধ যখন চরম আকার ধারণ করল, তখন আলাইরা এক প্রাচীন প্রবচনে অভিশাপ ভাঙার একমাত্র উপায় খুঁজে পেল: "শুধুমাত্র আলোর সন্তানের আত্মত্যাগই অন্ধকারকে চিরতরে দূর করতে পারে।" সে বুঝতে পারল, অভিশাপ ভাঙার একমাত্র উপায় হল নিজেকে প্রাচীন জাদুস্তম্ভে উৎসর্গ করা। এই স্তম্ভটি নভারিয়ার কেন্দ্রে অবস্থিত ছিল এবং এটিই ছিল অভিশাপের মূল উৎস।
সে নিজেকে প্রস্তুত করল তার শেষ যাত্রার জন্য। তার মনে ছিল কেবল নভারিয়ার শান্তি ফিরিয়ে আনার আকাঙ্ক্ষা। রায়ান, যে তখন তার নিজের রাজ্যের সৈন্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল, সে জানতে পারল আলাইরার এই আত্মত্যাগের পরিকল্পনার কথা। তার হৃদয়ে পুরনো ভালবাসার স্মৃতি জেগে উঠল। সে বুঝতে পারল, তার পরিবারের প্রতি অন্যায়ের পেছনে হয়তো আরও গভীর কোনো রহস্য ছিল, যা সে এতদিন জানতে পারেনি।
রায়ান যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ছুটে এল আলাইরাকে থামাতে। সে তাকে থামানোর চেষ্টা করল, কিন্তু আলাইরা ছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যখন আলাইরা নিজেকে জাদুস্তম্ভের দিকে ছুঁড়ে দিতে যাচ্ছিল, তখন রায়ান শেষ মুহূর্তে তাকে সরিয়ে দিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করল। তার আত্মত্যাগে নভারিয়ার আকাশ এক ঝলকে আলোকিত হয়ে উঠল। কালো ধোঁয়া আর অভিশাপের শক্তি ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে লাগল।
অধ্যায় ১৭–১৮: পুনর্জন্ম ও শান্তি
রায়ানের আত্মত্যাগে নভারিয়ার উপর থেকে প্রাচীন অভিশাপ চিরতরে ভেঙে গেল। চারটি রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ থেমে গেল, আর ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে এল। ড্রাগনরা তাদের শক্তি ফিরে পেল, পরীরা তাদের জাদুতে নতুন করে সৌন্দর্য সৃষ্টি করল, জাদুকররা তাদের জ্ঞান দিয়ে নভারিয়াকে পুনর্গঠিত করল, আর মানুষ ও ছায়াযোদ্ধারা নতুন করে একতাবদ্ধ হলো।
আলাইরা একা রয়ে গেল, তার হৃদয়ে রায়ানের আত্মত্যাগের গভীর স্মৃতি। সে জানত, নভারিয়ার এই শান্তি রায়ানেরই দান। একদিন, যখন সে প্রাচীন জাদুর বইগুলি দেখছিল, তখন সে একটি নতুন বার্তা দেখতে পেল, যা তার পূর্বপুরুষদের দ্বারা লেখা হয়েছিল: "আলো থেকে ছায়া জন্ম নেয়, আর ছায়া থেকে আলো আবার ফিরে আসে।" এই বাক্যটি তার কাছে রায়ানের পুনর্জন্মের এক নতুন ইঙ্গিত দিল।
গল্প শেষ হয় যখন আলাইরা অনুভব করে রায়ানের আত্মা এখন তার চারপাশেই, প্রকৃতির প্রতিটি দিকেই। বাতাসে, প্রতিটি পাতায়, প্রতিটি সূর্যালোকের কণে সে রায়ানের উপস্থিতি অনুভব করে। নভারিয়া শান্তিতে রয়েছে, আর আলাইরা জানে, প্রেম আর আত্মত্যাগের মাধ্যমে সবকিছুই সম্ভব। এই গল্প নভারিয়ার নতুন প্রজন্মের কাছে এক কিংবদন্তী হয়ে রয়ে গেল, যেখানে আলো আর ছায়া এক হয়ে নভারিয়াকে বাঁচিয়েছিল।
রায়ানের আত্মত্যাগের পর নভারিয়ার আকাশ থেকে কালো মেঘ সরে গিয়েছিল, অভিশাপের শেকল ভেঙে গিয়েছিল চিরতরে। চার রাজ্যের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিদ্বেষ আর ঘৃণা এক মুহূর্তে বিলীন হয়ে গেল, যেন এক নতুন ভোর হয়েছে। ড্রাগনরা আবার তাদের মহিমা ফিরে পেল, তাদের গর্জন এখন আর ভয়ের নয়, স্বাধীনতার গান। এলভেন্ডারের বনভূমিতে আবারও নতুন প্রাণ সঞ্চার হলো, মায়াবী পরীরা তাদের জাদুর বুননে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলল। মাইরান্থার জাদুকররা তাদের জ্ঞান আর শক্তিকে যুদ্ধের বদলে পুনর্গঠনে নিয়োগ করল, আর ভেলডোরের মানুষ ও ছায়াযোদ্ধারা হাতে হাত রেখে গড়ে তুলল এক নতুন সমাজ, যেখানে অতীতের বিভেদ ছিল কেবলই এক দুঃস্বপ্ন।
কিন্তু আলাইরা মুনরোজের হৃদয়ে এই শান্তি ছিল এক গভীর বিষাদের প্রতিচ্ছবি। নভারিয়ার মুক্তি এসেছিল রায়ানের জীবনের বিনিময়ে। সে একা, কিন্তু রায়ানের স্মৃতি তার প্রতিটি নিঃশ্বাসে মিশে ছিল। দিনের পর দিন সে মাইরান্থার প্রাচীন গ্রন্থাগারে বসে থাকত, পুরনো পাণ্ডুলিপি ঘাঁটত, কেবল একটি আশায়—যদি রায়ানের কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়। এক সন্ধ্যায়, যখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল আর শেষ আলোয় গ্রন্থাগারের প্রতিটি ধুলো কণা ঝলমল করছিল, আলাইরা 'নভারিয়ার হৃদয়' পাণ্ডুলিপিটির শেষ পৃষ্ঠাটি খুলল। সেখানে পূর্বে না দেখা এক নতুন প্রবচন লেখা ছিল, যেন অদৃশ্য কোনো হাতে সদ্যই লেখা হয়েছে:
"আলো থেকে ছায়া জন্ম নেয়, আর ছায়া থেকে আলো আবার ফিরে আসে। প্রতিটি আত্মত্যাগ, এক নতুন সৃষ্টির বীজ বুনে দেয়। সমাপ্তিই কেবল নতুন শুরুর ইঙ্গিত।"
এই বাক্যটি আলাইরার হৃদয়ে এক শীতল শান্তির পরশ বুলিয়ে দিল। সে বুঝল, রায়ানের আত্মত্যাগ কেবল অভিশাপ ভাঙার জন্যই ছিল না, তা ছিল এক নতুন চক্রের সূচনা। রায়ান হয়তো তার দৈহিক রূপে নেই, কিন্তু তার আত্মা নভারিয়ার প্রতিটি কোণে, প্রতিটি জীবন কণার মধ্যে মিশে আছে। বাতাসে তার ফিসফিসানি, গাছের পাতায় তার স্পর্শ, সূর্যালোকের উষ্ণতায় তার উপস্থিতি – আলাইরা সব অনুভব করতে পারত।
সে চোখ বন্ধ করল। তার সামনে ভেসে উঠল রায়ানের স্মিত হাসি, তার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, আর ভালোবাসার নীরব প্রকাশ। তার মনে হলো, রায়ান তাকে ছেড়ে যায়নি, বরং আরও গভীরভাবে তার সাথে মিশে গেছে। নভারিয়া এখন এক নতুন দিনের সাক্ষী, আর এই নতুন দিনের প্রতিটি উজ্জ্বলতায় রায়ানের আত্মত্যাগের আলো ঝলমল করছে। আলাইরা জানত, ভালোবাসা কখনো শেষ হয় না, তা কেবল রূপ বদলায়, আর সবচেয়ে গভীর ভালোবাসা হলো সেই, যা অন্যের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকে। এই গল্প নভারিয়ার প্রতিটি প্রজন্মের কাছে এক কিংবদন্তী হয়ে রইল, যেখানে আলো আর ছায়া এক হয়ে শিখিয়েছিল, প্রকৃত শক্তি থাকে ভালোবাসায়, ত্যাগে, আর অবিচল বিশ্বাসে।