From the shadow of suffering to the light in Bengali Motivational Stories by Prabhakar Bhangar books and stories PDF | কষ্টের ছায়া থেকে আলোর পথে

Featured Books
  • અતીત

     અમદાવાદ શહેરના એક પોશ વિસ્તારના એક કેફેમાં આજે વર્ષો પછી રો...

  • દિલનો કિરાયેદાર - 1

    સવારના પાંચ વાગ્યા. આરતી આંગણું સાફ કરતી હતી. ઠંડી હવામાં એન...

  • મને માફ કરીશ બેટા?

    હું ઇડર નામના શહેરમાં એક શાળામાં શિક્ષક તરીકે ફરજ બજાવતો હતો...

  • કવચ - ૨

    ભાગ ૨: એક પ્રશ્નનો ઉદયકર્ણની દાનવીરતાની આ કથા રવિએ સેંકડો વા...

  • હું અને મારા અહસાસ - 132

    આપણે હાસ્યથી ભેટીએ છીએ. બધી ફરિયાદો ભૂલીને, આપણે હાસ્યથી ભેટ...

Categories
Share

কষ্টের ছায়া থেকে আলোর পথে

শৈশবের আঁধার
রাহুলের বয়স তখন মাত্র আট। ছোট্ট গ্রামে, কাঁচা বাড়িতে, দরিদ্রতার ছায়া তার শৈশবকে গ্রাস করেছিল। বাবার কোনো স্থায়ী কাজ ছিল না, কখনো দিনমজুরি, কখনো ছোটখাটো কাজ—কিন্তু কিছুতেই সংসার চলে না। মা সারাদিন তাঁত বুনতেন, তার টুকরো টাকায় কোনো রকমে সংসার চলতো। বাবা কখনো কিছু করার চেষ্টা করেননি, বরং নিজের ব্যর্থতাকে মেনে নিয়ে সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতেন।

২. বন্ধ ঘরের জীবন
রাহুল আর তার দিদি—দুজনকেই বাবা-মা সারাদিন ঘরে আটকে রাখতেন। বাইরে কারো সঙ্গে মিশতে দিতেন না, খেলতে দিতেন না। তাদের মনে হতো, বাইরের দুনিয়া তাদের সন্তানদের 'বিপথে' নিয়ে যাবে। সারাদিন শুধু পড়াশোনার জন্য চাপ—"তোমাদের ভালো রেজাল্ট করতে হবে, নইলে আমাদের মতো কষ্ট পাবে!" এই কথাটা রাহুলের কানে সারাক্ষণ বাজত।

৩. মানসিক নির্যাতনের ছায়া
বাবা-মা দুজনেই রাহুলের ওপর মানসিক চাপ দিতেন। বাবা মাঝে মাঝে রেগে গিয়ে চিৎকার করতেন, "তুই কিছুই পারবি না!" মা পড়াশোনার জন্য মারধর করতেন, দিদি সুযোগ পেলেই রাহুলকে মারত, অপমান করত। রাহুলের মনে হত, সে যেন পৃথিবীর সবচেয়ে অপ্রয়োজনীয় মানুষ। ধীরে ধীরে সে ডিপ্রেশনে চলে গেল—কিছুতেই মন বসত না, হাসতে ভুলে গিয়েছিল।

৪. আলোর সন্ধানে
একদিন রাহুলের স্কুলের এক শিক্ষক তার মন খারাপের কারণ জিজ্ঞেস করলেন। রাহুল প্রথমবার নিজের কষ্টের কথা খুলে বলল। শিক্ষক তাকে বললেন, "তুমি যদি নিজের স্বপ্নে বিশ্বাস করো, কেউ তোমাকে আটকাতে পারবে না।" এই কথাগুলো রাহুলের মনে আশার আলো জ্বালালো। সে পড়াশোনায় মন দিল, নিজের জন্য পড়তে শুরু করল—শুধু বাবা-মার জন্য নয়।

৫. সংগ্রাম ও সাফল্য
রাহুল কষ্টের মাঝেও নিজের স্বপ্ন আঁকড়ে ধরল। সে জানত, পড়াশোনা ছাড়া তার মুক্তি নেই। স্কুলের সেরা ছাত্র হয়ে উঠল, স্কলারশিপ পেল। কলেজে পড়ার সুযোগ পেল শহরে। সেখানে নতুন বন্ধু, নতুন পরিবেশ—ধীরে ধীরে সে নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেল।

৬. নতুন জীবন
রাহুল পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি পেল। মায়ের কষ্টের দিন শেষ করল, বাবাকেও নিজের দায়িত্বে নিয়ে নিল। দিদিকেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করল।

৭. গল্পের শেষ কথা
রাহুল জানত, তার শৈশবের কষ্ট তাকে গড়ে তুলেছে। সে আজও ভাবে, বাবা-মা তাকে ভালোবেসেই কঠোর ছিলেন, কিন্তু তাদের অজ্ঞতা ও দারিদ্র্য ছিল তার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষক। রাহুল আজ সমাজের পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য কাজ করে—তাদের বলে, "কষ্ট তোমাকে গড়ে তোলে, হার মানো না।"

রাহুলের জীবনের গল্পটি কেবল দারিদ্র্য, নির্যাতন আর সংগ্রামের নয়—এটি আশার, আত্মবিশ্বাসের এবং জয়ের গল্প। ছোটবেলা থেকে যে ছেলেটি পরিবারের অভাব, বাবার অবহেলা, মায়ের কষ্ট আর দিদির অত্যাচারের মধ্যে বেড়ে উঠেছিল, সেই রাহুল আজ নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায়ে জীবনের অন্ধকার থেকে আলোর পথে পৌঁছেছে।

শৈশবের গুমোট ঘর, জানালার বাইরে দেখা মুক্ত আকাশ, আর মায়ের ঘর্মাক্ত মুখ—এসবই রাহুলের জীবনের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল। তার মনে পড়ে, কত রাত সে ঘুমাতে পারেনি, কতদিন সে চুপচাপ কাঁদত, কতবার মনে হয়েছে—জীবনটা বুঝি এখানেই থেমে যাবে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকের একটি কথাই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল—"নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো।"

রাহুল সেই বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরেছিল। পড়াশোনায় সাফল্য, নিজের পায়ে দাঁড়ানো, পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া—সবই সে ধাপে ধাপে অর্জন করেছে। আজ সে শুধু নিজের নয়, সমাজের পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্যও কাজ করে। তাদের বলে, “কষ্ট তোমাকে ভেঙে দেয় না, বরং গড়ে তোলে। কখনও হাল ছেড়ো না।”

রাহুল জানে, তার বাবা-মা তাদের অজ্ঞতা আর দারিদ্র্যের কারণে কঠোর হয়েছিলেন, কিন্তু তার নিজের জীবন তাকে শিখিয়েছে—ভালোবাসা, সহানুভূতি আর আত্মবিশ্বাসই মানুষকে সত্যিকারের মানুষ করে তোলে।

আজ রাহুলের জীবনের গল্প হাজারো কষ্টে বেড়ে ওঠা শিশুর জন্য এক আশার আলো। তার জীবন প্রমাণ করে, অন্ধকার যতই গভীর হোক, সাহস আর পরিশ্রম থাকলে জীবনে আলো আসবেই।