মাতঙ্গীর অভিশাপ

(0)
  • 12
  • 0
  • 3.3k

গঙ্গার স্বচ্ছ নীল জলে ভোরের আলো ঝিকমিক করছে। তার ওপরে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে মহীরুহের মতো এক পাহাড়, আর তার কোলে বিস্তৃত ছোট্ট রাজ্য গিরিরামপুর। পাহাড়ের বুক ঘেঁষে, গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা রাজপ্রাসাদটিকে দেখে মনে হতো যেন দেবতাদের বাসস্থান। রাজ্য ছোট হলেও তার শৃঙ্খলা, শান্তি আর প্রজাদের সুখে দেশজুড়ে সুনাম ছড়িয়ে ছিল। রাজা বীরেন্দ্রনাথ সিংহ ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, প্রজাহিতৈষী আর গভীরভাবে ধর্মবিশ্বাসী মানুষ। প্রতিদিন ভোরে গঙ্গাজল নিয়ে পূজা করতেন, মন্দিরে গিয়ে দেবীকে প্রণাম না করে তিনি কখনো দিনের কাজ শুরু করতেন না। রানী সুবর্ণপ্রভা ছিলেন শান্ত, মধুরকণ্ঠী নারী—যিনি প্রাসাদের ভেতরে যেন এক আলোর প্রদীপের মতো ছড়িয়ে দিতেন মমতা।

1

মাতঙ্গীর অভিশাপ - 1

অভিশাপের বীজগঙ্গার স্বচ্ছ নীল জলে ভোরের আলো ঝিকমিক করছে। তার ওপরে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে মহীরুহের মতো এক পাহাড়, তার কোলে বিস্তৃত ছোট্ট রাজ্য গিরিরামপুর। পাহাড়ের বুক ঘেঁষে, গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা রাজপ্রাসাদটিকে দেখে মনে হতো যেন দেবতাদের বাসস্থান। রাজ্য ছোট হলেও তার শৃঙ্খলা, শান্তি আর প্রজাদের সুখে দেশজুড়ে সুনাম ছড়িয়ে ছিল।রাজা বীরেন্দ্রনাথ সিংহ ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, প্রজাহিতৈষী আর গভীরভাবে ধর্মবিশ্বাসী মানুষ। প্রতিদিন ভোরে গঙ্গাজল নিয়ে পূজা করতেন, মন্দিরে গিয়ে দেবীকে প্রণাম না করে তিনি কখনো দিনের কাজ শুরু করতেন না। রানী সুবর্ণপ্রভা ছিলেন শান্ত, মধুরকণ্ঠী নারী—যিনি প্রাসাদের ভেতরে যেন এক আলোর প্রদীপের মতো ছড়িয়ে দিতেন মমতা।কিন্তু তাঁদের একমাত্র পুত্র ...Read More

2

মাতঙ্গীর অভিশাপ - 2

গিরিরামপুর তখনও ভোরের ঘুম কাটিয়ে ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। গঙ্গার জলে লাল আভা পড়ে চকচক করছে। কিন্তু সেই শান্ত মধ্যে হঠাৎ এক অদ্ভুত কাঁপুনি ছড়িয়ে পড়ল। চারদিকে কাকের ডাক, শেয়ালের হাঁক, আর ঝড়ের মতো বাতাস। গ্রামের বয়স্করা ভয় পেয়ে বলল—“আজ নিশ্চয়ই কিছু অশুভ ঘটতে চলেছে।”সেই সময় মন্দিরের সামনে যারা পূজো দিতে গিয়েছিল, তারা হঠাৎ এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখল। মন্দিরের কালো পাথরের দেওয়ালে যেন লাল রঙের হাতের ছাপ ফুটে উঠছে, তারপর মিলিয়ে যাচ্ছে। এক মুহূর্তে বাতাসে শোনা গেল অদ্ভুত ধ্বনি—“যারা অন্যায় করবে, যারা অহংকারে অন্ধ হবে, তারা রক্ষা পাবে না।”মানুষ বুঝতে পারল, দেবী মাতঙ্গী অদৃশ্যভাবে প্রকাশ পেয়েছেন। গ্রামজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে ...Read More

3

মাতঙ্গীর অভিশাপ - 3

তৃতীয় পর্ব: “রহস্যময় অতিথি”গিরিরামপুরে সেদিন সন্ধ্যা নেমেছিল অদ্ভুত রঙে। গঙ্গার জলে সোনালি আভা পড়ছিল, পাহাড়ের গা থেকে হালকা কুয়াশা আসছিল। এমন সময় গ্রামে প্রবেশ করল এক অচেনা মেয়ে। তার গায়ে সাদামাটা শাড়ি, কপালে লাল টিপ, চোখে এক অদ্ভুত শান্তি। সে গ্রামের মন্দিরের দিকে এগিয়ে গেল, যেন পথ চেনে।গ্রামবাসী অবাক হয়ে দেখল—সে মন্দিরে ঢুকে একদম মাতঙ্গী মূর্তির সামনে বসে পড়ল। তারপর চোখ বুজে মন্ত্রপাঠ করতে লাগল। যারা মন্দিরে ছিল তারা বলল—“এ মেয়েটি কে? এর তো মুখ থেকে দেবীর মন্ত্র বেরোচ্ছে!”মেয়েটি মন্ত্রপাঠ শেষ করে জল ঢালল মাতঙ্গীর পায়ে, তারপর আস্তে করে বলল—“মা, আমি তোমার ডাকে এসেছি। যাকে তুমি বাঁচাতে বলেছ, ...Read More

4

মাতঙ্গীর অভিশাপ - 4

চতুর্থ পর্ব: “প্রথম আঘাত”গিরিরামপুরে দিনটা ছিল শান্ত। আকাশ পরিষ্কার, গঙ্গার ঢেউ শান্ত। কিন্তু প্রাসাদের গোপন কক্ষে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে অদ্ভুত ফুটে উঠছিল।মন্ত্রী বলল—“আজ রাতেই কাজ হবে। রাজপুত্রকে আমরা সম্পূর্ণভাবে আমাদের হাতে আনব। আর এই মেয়েটি—আরাধ্যা—ওকে সরিয়ে দিতে হবে। নাহলে সে আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা নষ্ট করে দেবে।”তাদের পরিকল্পনা ছিল সহজ—আরাধ্যাকে অপমান করে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যাতে রাজপুত্র নিজেই তাকে প্রাসাদ থেকে তাড়িয়ে দেয়।---রাত নামল। প্রাসাদের অঙ্গনে বড়সড় এক সভা বসানো হলো। রাজা সেখানে উপস্থিত, রাজপুত্রও আছে। হঠাৎ মন্ত্রী অভিযোগ আনল—“মহারাজ, এই আরাধ্যা একজন সাধারণ মেয়ে হলেও সে আপনার রাজ্যের নিয়ম ভেঙেছে। সে নাকি গোপনে কালো তন্ত্র করে গ্রামের লোককে বশে ...Read More