The Download Link has been successfully sent to your Mobile Number. Please Download the App.
Continue log in with
By clicking Log In, you agree to Matrubharti "Terms of Use" and "Privacy Policy"
Verification
Download App
Get a link to download app
একটি শিরোনামহীন কবিতা.... তিনি পারতেন… হাসিমুখে মঞ্চে বক্তৃতা দিতে, রাজনীতির খেলায় ঘুঁটি সাজিয়ে রাখতে, গান্ধীজীর ইশারায় চলে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি দখল করতে। তাঁর হাতে ছিল সম্মান, প্রভাব, ছিল নিজের জীবন গড়ে তোলার অবাধ সুযোগ। কিন্তু তিনি বেছে নিলেন আগুনের পথ— যেখানে নেই আলোকিত কোনো করিডোর, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপে লুকিয়ে থাকে মৃত্যু, যেখানে প্রতিটি নিশ্বাসে শুধুই দেশমাতৃকার আহ্বান। তিনি জানতেন— এই পথ মানে নিজের অস্তিত্ব বিসর্জন, এই পথ মানে চিরকালের আড়াল। তবু তিনি গেলেন। কেউ তাঁকে ঠেলে দেয়নি, তিনি নিজেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সেই অন্ধকারে। আজ আমরা সেই স্বাধীন দেশের মানুষ, তাঁর ত্যাগের ফসল খেয়ে নিজেদের ছোট্ট স্বার্থের জন্য পদে পদে অপমান করছি তাঁকে। ক্ষমতার লোভে ভুলে যাচ্ছি যে মানুষ বেঁচে থেকেও মৃত্যুকে বেছে নিয়েছিলেন শুধুমাত্র আমাদের জন্য। তাহলে প্রশ্ন জাগে— নেতাজীর এত আত্মত্যাগ কি এই দেশের জন্য ? যেখানে মাটির চেয়ে টাকা বড়, যেখানে নীতির চেয়ে স্বার্থ বড়, যেখানে ইতিহাসের নায়ককে কেবল ফটো আর মূর্তির মধ্যে বন্দি করা হয় ? নেতাজী যদি আজ ফিরে তাকান, হয়তো তাঁর বুক ফেটে উঠবে কান্নায়। হয়তো আবারও বলবেন— “আমি দেশকে মুক্ত করেছিলাম শুধু শাসকের হাত থেকেই নয়, মানুষের ভেতরের দাসত্ব থেকেও। কিন্তু তোমরা কি মুক্ত হয়েছ ? তোমরা কি সত্যিই আমার আত্মত্যাগের যোগ্য" ? "যদি তোমরা আমাকে সত্যিই ভালোবাসো, তাহলে মূর্তিতে ফুল দিও না, বক্তৃতায় করতালি দিও না। আমার রক্তের ঋণ শোধ করো দেশের প্রতি সত্যিকারের সততা দিয়ে"। "স্বাধীনতা মানে শুধু পতাকা ওড়ানো নয়, স্বাধীনতা মানে দুর্নীতি ভাঙ্গা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, নিজেকে দেশের জন্য বিলিয়ে দেওয়া"। "বল তো, আজ তোমরা কি প্রস্তুত ? তোমরা কি আমার আত্মত্যাগের যোগ্য ? তাহলে এগিয়ে আসো— কারণ আমি নেই, তবুও আমি আছি, তোমাদের বুকের ভেতর আগুন হয়ে, তোমাদের রক্তের মধ্যে প্রতিজ্ঞা হয়ে"।
মহানবমীর সকাল সপ্তমীর আলো ঝলমলে রাত পেরিয়ে, অষ্টমীর উল্লাসও ফুরিয়ে গেলো ধীরে ধীরে। আজ মহানবমী— উমা বিদায় নেবেন কাল। মনে হয় আকাশও যেন জানে এই সত্যি, তাই ভোররাত থেকেই বৃষ্টি হয়ে কাঁদছে অবিরাম। শঙ্খ-ঘন্টায় ধ্বনিত আরতির শব্দ মিশে গেছে জলভেজা বাতাসে। ঢাকের আওয়াজও আজ যেন ভারী, প্রতিটি তাল যেন বলে— “বিদায় আসছে, বিদায় আসছে।” শিউলি ফুলে ভরা আঙিনা ভিজে গেছে বৃষ্টির জলে, যেন তারাও জানে, এই আনন্দের উৎসবের অন্তরালেও লুকিয়ে আছে এক অদ্ভুত বিষণ্নতা। আমরা জানি, কাল উমা ফিরে যাবেন শ্বশুরবাড়ি, আমাদের হৃদয় ফাঁকা করে রেখে। তবুও আজকের নবমীর পূজা, আজকের এই ভেজা-ভেজা সকাল— শুধুই প্রার্থনা, মা যেন আশীর্বাদ দিয়ে যান প্রতিটি ঘরে, প্রতিটি মনে, যাতে আগামী বছর আবার ফিরে আসার অপেক্ষা আমাদের সহ্য হয়। আজ বৃষ্টি মানেই শুধু প্রকৃতির কান্না নয়, আজ বৃষ্টি মানে আমাদের হৃদয়ের অশ্রু, যা মিশে যাচ্ছে উমার পদচিহ্নে— বিদায়ের সুরে, আবার তাঁর আগমনের প্রত্যাশায়।
খুব শীঘ্রই ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হতে চলেছে আমার প্রথম বই— **“মিষ্টি নামের তিক্ত রোগ : ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির উপায়”**। ডায়াবেটিস আজ আমাদের সমাজের সবচেয়ে নীরব ঘাতকগুলোর একটি। এই বইয়ে আমি শুধু রোগের চিকিৎসা নয়, এর আসল কারণগুলোকে খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছি। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, ব্যক্তিগত অনুশীলন এবং জীবনযাপনের নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আমি উপলব্ধি করেছি— ডায়াবেটিস কোনো অনিবার্য রোগ নয়; সঠিক লাইফস্টাইল মেনে চললে এর কবল থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই বই পাঠকের জন্য হবে— - ডায়াবেটিস সম্পর্কে গভীরতর উপলব্ধি। - কর্টিসল, খাদ্যাভ্যাস, ফাস্টিং ও গাট হেলথের মতো বিষয়ের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ। - বাস্তব জীবনে প্রয়োগযোগ্য লাইফস্টাইল পরিকল্পনা, যা ডায়াবেটিসকে শুধু নিয়ন্ত্রণই নয়, মুক্তির পথে নিয়ে যেতে পারে। আমার বিশ্বাস, এই বই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষদের নতুন আশা দেবে, আর যারা এখনো সুস্থ আছেন তাদের জন্য হবে এক মূল্যবান দিশারি— যাতে ভবিষ্যতে এই রোগের ফাঁদে না পড়তে হয়। অপেক্ষা করুন, খুব তাড়াতাড়িই আপনাদের হাতে পৌঁছে যাবে “মিষ্টি নামের তিক্ত রোগ”।
🪷মহাষ্টমী🪷 আজ মহাষ্টমী। ঢাকের আওয়াজে, শঙ্খের ধ্বনিতে, ধূপধুনোর গন্ধে ভরে উঠেছে চারপাশ। এ যেন কেবল উৎসব নয়, এ এক চিরন্তন আহ্বান— শক্তির, ভক্তির, মায়ের অপরাজেয় রূপের। সকালের অঞ্জলিতে হাতজোড় করে দাঁড়ায় ভিড়। ফুলের পাঁপড়ির মতো বিশ্বাস ঝরে পড়ে মায়ের পদতলে। সবার মুখে একটাই ডাক— “জয় মা দুর্গা" ! কত স্মৃতি জেগে ওঠে এই দিনে— শৈশবের নতুন জামার গন্ধ, প্যান্ডেলের আলোয় ছুটে চলা, অঞ্জলির পর খাওয়া খিচুড়ি প্রসাদের স্বাদ, আর সিঁদুরে রাঙানো মায়ের ভেজা কপাল। মহাষ্টমী মানেই পরিবারের মিলন, ভক্তির ঢেউ, ঐতিহ্যের উজ্জ্বলতা। দেবী দশপ্রহরণধারিণী, হাতে হাতে অস্ত্র, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করার প্রতীক। তিনি কেবল দেবী নন, তিনি সাহস, তিনি প্রেরণা। তিনি শেখান— অন্যায়ের সামনে মাথা নত করো না, অন্ধকার যত গভীরই হোক, আলো জ্বলে উঠবেই। মহাষ্টমী তাই কেবল দেবীর পূজা নয়— এ আমাদের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলার দিন। ভালোবাসা, ন্যায় আর সাহস— এই তিনের মিলেই দেবীর প্রকৃত রূপ। প্রতিটি ঢাকের আওয়াজ আজ মনে করিয়ে দেয়— আমাদের ভেতরেই দেবীর শক্তি লুকিয়ে আছে।
# হাইব্রিডের জোয়ারে হাইব্রিডের জোয়ারে ভেসে হারায়নি শুধু দেশি বীজের ধান, হারিয়ে গেছে বাঙালির সেই জারি সারির মত আটপৌরে গান। মাটির গন্ধ মাখা দোতারার সুর চাপা পড়ে গেছে আজ ইস্পাতের গর্জনে, মাঠে বসে বাঁশি বাজালেও রাখাল শোনা যায় না তা মাইকের কম্পনে। কৃষকের ঘামে ভিজে ওঠা ক্ষেত হারিয়ে ফেলেছে বাতাসের কাব্য, আজ ধানও সংখ্যা, গানও সংখ্যা সবই এখন লেহ্য পেয় চোষ্য চব্য! তবুও কোথাও গোপনে বেঁচে থাকে আমার মায়ের সেই গানের ভাষা, এ তো শুধুই গান নয় ভাই গানের থেকেও আরও কিছু খাসা। জানি না আর ফিরে পাব কিনা আতপ চালের সেই মিষ্টি ঘ্রাণ, যেখানে গানেই মিশে থাকে আমার অস্তিত্ব, আমার প্রাণ।
চরৈবেতি চরৈবেতি বৈদিক যুগের ঋষিরা বলেছিলেন— “চরৈবেতি চরৈবেতি”। মানে এগিয়ে যাও, এগিয়ে যাও। এগিয়ে যাওয়াই আমাদের ধর্ম। সামনে কী আছে, কী পুরস্কার মিলবে— এগুলো ভেবে থেমে গেলে চলবে না। কারণ জীবন কোনো গন্তব্য নয়, জীবন হলো চলমান যাত্রা। যেমন গীতায় বলা হয়েছে— “কাজ করে যাও, ফলের আশা করো না।” ফল আমাদের হাতে নেই, হাতে আছে শুধুই কর্ম। আজ যে কর্ম বীজ বপন করব, কাল তার ফল স্বাভাবিক নিয়মেই আসবে। তাই ব্যর্থতার ভয় পেয়ো না, সাফল্যের মোহে আটকে থেকো না। চলতে থাকো— চলতে থাকলেই জীবন তার প্রকৃত অর্থ খুঁজে পাবে। চরৈবেতি চরৈবেতি! এটাই আমাদের ধর্ম। এটাই আমাদের পথ।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধার্ঘ্য ----------------------------------------- তিনি এসেছিলেন এক অন্ধকার সময়ে— যখন সমাজের আকাশ ঢাকা ছিল কুসংস্কারের মেঘে, নারীর জীবনে তখন ছিল অসহায় দুঃখের ঘনঘটা, শিক্ষা ছিল অভিজাতদের সম্পত্তি, গরিব মানুষের জন্য ছিল না কোনো দিশা। তিনি বই হাতে নিলেন, আলো জ্বালালেন বর্ণপরিচয়ের পাতায়, তিনি কলম হাতে নিলেন, গড়লেন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিপ্লবের অগ্নি মশাল। বিধবাদের অমানবিক জীবনযন্ত্রণা ভেঙে বিধবা বিবাহকে তিনি দিলেন বৈধতার অধিকার। নারীশিক্ষার স্বপ্নকে তিনি তুলে আনলেন বাস্তবের আঙিনায়, দরিদ্রের হাতে দিলেন বই, অভিজাতের চোখে চোখ রেখে বললেন— “শিক্ষা সবার জন্য।” মানুষের মতো মানুষ হতে হলে প্রয়োজন দয়া, প্রয়োজন মানবতা— এই কথাই তিনি বারবার শিখিয়েছেন। যত কটূক্তি, যত অপমান, যত বিরোধ— সব পেরিয়ে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন অটল এক মানবতাবাদী বিশাল বটবৃক্ষের মতো। আজও যখন আমরা পথ হারাই, তখন ফিরে তাকাই তাঁর আদর্শের দিকে। আজ তাঁর জন্মদিনে আমরা মাথা নত করি, তাঁর চরণে অর্পণ করি আমাদের আন্তরিক প্রণাম ও শ্রদ্ধার্ঘ্য।
## ঈশ্বর কোথায় ? আকাশে নয়, নক্ষত্রের দূর ঝলকে নয়, ঈশ্বর লুকিয়ে নেই কোনো মন্দিরের অন্ধকার গর্ভে। তিনি আছেন আমাদের ভেতরে— শ্বাসের ওঠা-নামায়, হৃদয়ের অনন্ত সুরে। লালন গেয়েছেন— *“খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়!”* দেহটাই সেই খাঁচা, আর সেই অচিন পাখিই ঈশ্বর, যিনি প্রবাহিত হচ্ছেন স্নায়ুর নদী বেয়ে, চক্রের পদ্মে জাগিয়ে তুলছেন আলো। রামপ্রসাদ বলেছিলেন— *“হৃদি রত্নাকরের অগাধ জলে ডুব দে রে মন, কালী বলে।”* অর্থাৎ ঈশ্বরের দরজা হৃদয়ের গভীরে, যেখানে বেদও ঘোষণা করেছে— *“আত্মানাং বিদ্ধি”*, নিজেকে জানো, কারণ নিজেকে জানা মানেই অসীমকে জানা। মেরুদণ্ডের সুষুম্না নাড়ি যেন অদৃশ্য সেতু, ইড়া আর পিঙ্গলা তার দুই প্রহরী। মূলাধার থেকে আজ্ঞা অবধি ছয় পদ্ম ফুটে আছে, প্রত্যেকটি চক্র এক একটি সোপান, যা বেয়ে আত্মা এগিয়ে যায় সহস্রার প্রান্তে। সেখানে নেই সীমা, নেই মৃত্যু, আছে কেবল আলো, অসীম শান্তি। যার ভেতরের স্নায়ুব্যবস্থা যতখানি জাগ্রত, তার ঈশ্বরচেতনা ততখানি দীপ্ত। এই দীপ্তির কারণেই শঙ্করাচার্য, বিবেকানন্দ স্বল্পায়ু হয়েও রেখে গেছেন অমরতার ছাপ। তাঁদের অন্তরের ঈশ্বর উত্তাল মহাসমুদ্রের মতোই প্রকাশিত হয়েছিল। তাহলে কি মন্দির, মসজিদ, গির্জা অর্থহীন ? না, তারা আমাদের স্মরণ করায়— যে পথ বাইরের দিকে, তার দিশা আসলে ভেতরের দিকে। বাইরের ঈশ্বরকে পেতে হলে প্রথমে জাগাতে হবে ভেতরের ঈশ্বরকে। রবীন্দ্রনাথ তাই লিখেছিলেন— *“সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও আপন সুর, আমার মাঝে তোমার প্রকাশ তাই এত মধুর।”* ঈশ্বর সর্বত্র, কিন্তু সবচেয়ে বেশি তিনি লুকিয়ে আছেন আমাদের নিজেদের ভেতরেই। আমরা যতদিন না নিজের অন্তরে তাঁকে চিনব, ততদিন বাইরে খুঁজে ফিরব ব্যর্থ যাত্রী হয়ে। কারণ সত্য একটাই— ঈশ্বর কখনো দূরে নন, তিনি তো আমাদের ভেতরেই নিঃশব্দে গাইছেন অনন্ত জীবনের গান।
# ছায়াপথের পারে নিভে যাওয়া প্রদীপের ধোঁয়ায় আমি একবার শুনেছিলাম— কেউ যেন ডাকছে আমাকে, অচেনা অথচ অন্তরের মতোই আপন তাঁর সুর। কণ্ঠস্বরটি শান্ত, অথচ বজ্রের মতোই তীক্ষ্ণ, চোখ মেলতেই দেখি— আলো নয়, ছায়াও নয়, বরং ছায়ার ভেতর জন্ম নেওয়া এক আলোকিত বিস্ময়! তাঁর নাম কেউ জানে না, কেউ তাঁকে সন্ন্যাসী বলে, কেউ বলে ছায়া, আমি বলি— তিনি আমার হারিয়ে যাওয়া সত্যের আয়না। তিনি কিছুই দেন না, কেবল ছুঁয়ে যান, একটা প্রশ্ন রেখে যান বুকের ভেতর— “শেষ কি সত্যিই শেষ ? নাকি এখানেই নতুন ভোরের শুরু ?” যতই হারিয়ে যাই, তবুও তাঁর ছায়াই আমার সঙ্গী। ভেবেছি কতবার সব শেষ— কিন্তু প্রতিবারই দেখেছি, ছায়ার ভেতর থেকে আলো ফুটে ওঠে। সেই প্রশ্নের আলোয় আমি হেঁটে চলেছি, অন্ধকারের গলি পেরিয়ে— কোথায় যাচ্ছি জানি না, শুধুই শুনি তাঁর নীরব পদধ্বনি। আর আজও মনে হয়— জীবন আসলে এক যাত্রা, যার অপর পারে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি— স্বামী আত্মজ্ঞানানন্দ মহারাজ।
বেদ থেকে বটগাছ বেদে লেখা আছে— প্রকৃতিই ধর্ম, প্রকৃতিই জীবন। অগ্নি শুধু পূজার আগুন নয়, সে হলো আলো, তাপ, শক্তি— যার ছোঁয়া ছাড়া জীবন অসম্ভব। সূর্য কেবল আকাশের দীপ নয়, সে প্রাণের উৎস, সে হিমালয়ের চূড়া ছুঁয়ে ধানের শিষে সোনালি রং ছড়িয়ে দেয়। চন্দ্র শুধু রাত্রির শোভা নয়, সে হলো মায়ের দুধের মতো স্নিগ্ধতা, ক্লান্ত পৃথিবীর চোখে শীতলতার প্রলেপ। এই বেদের দর্শন থেকেই জন্ম নেয় প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা। তাই নদী হলো গঙ্গা, পাহাড় হলো কৈলাস, গাছ হলো পূজার আসন। আর সেই গাছের ভেতর সবচেয়ে পবিত্র প্রতীক হলো বটগাছ। বটগাছ শুধু ছায়া দেয় না, সে ২৪×৩৬৫ অক্সিজেন বিলায়, নিঃশ্বাসে প্রাণ দেয় মানুষের, অসীম শেকড় ছড়িয়ে ধরে রাখে মাটিকে। বটগাছ হলো অমরত্বের প্রতীক, যার ডাল ছড়ায় আকাশে, যার শিকড় নামে মাটিতে— যেন বলে যায়, "উচ্চতায় যেতে হলে শিকড়ে থাকতে হবে দৃঢ়ভাবে।" তাই হিন্দু ধর্ম বটগাছকে দেবতা মানে। কারণ এখানে কোনো কিছুই তুচ্ছ নয়, এক ফোঁটা জলও পূজ্য, একটি গাছও দেবতুল্য। বেদ থেকে বটগাছ— এ এক অন্তহীন যাত্রা। যেখানে ধর্ম মানে কেবল মন্ত্র নয়, ধর্ম মানে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা। যেখানে পূজা মানে অর্ঘ্য নয়, পূজা মানে কৃতজ্ঞতা। যতদিন বেদে শব্দ থাকবে, যতদিন বটগাছে সবুজ থাকবে, ততদিন হিন্দু ধর্ম বেঁচে থাকবে— মানুষের নিঃশ্বাসে, প্রকৃতির চিরন্তন বন্ধনে।
Copyright © 2025, Matrubharti Technologies Pvt. Ltd. All Rights Reserved.
Please enable javascript on your browser