The Author Saikat Mukherjee Follow Current Read বজ্রপাত By Saikat Mukherjee Bengali Horror Stories Share Facebook Twitter Whatsapp Featured Books THE MIRROR KEEPER The village library stood like a quiet guardian in the heart... Predicament of a Girl - 13 Predicament of a Girl A romantic and sentimental thriller Ko... HAPPINESS - 104 Keep erasing hatred from hearts in the universe. Keep... Love at First Slight - 28 The Grand Event at Marina Bay SandsThe night was alive with... The Village Girl and Marriage - 2 Diya had only seen the world of books; she had not witnessed... Categories Short Stories Spiritual Stories Fiction Stories Motivational Stories Classic Stories Children Stories Comedy stories Magazine Poems Travel stories Women Focused Drama Love Stories Detective stories Moral Stories Adventure Stories Human Science Philosophy Health Biography Cooking Recipe Letter Horror Stories Film Reviews Mythological Stories Book Reviews Thriller Science-Fiction Business Sports Animals Astrology Science Anything Crime Stories Share বজ্রপাত (3) 4.7k 11.8k 2 মাস্টারমশাই মাস্টারমশাই....ছুটতে ছুটতে এসে এইটুকু বলেই হাঁফাতে থাকে শুভম।সবাই বলে স্কুল মাস্টারী নাকী সবথেকে সুখের চাকরি। সে যে কত সুখের চাকরি, হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন হারাধনবাবু। ইউনিট টেষ্ট, মিডডে মিল, তারপরে এটা আবার বোর্ডিং স্কুল; সবসময়েই কাজের চাপ। সামনের সপ্তাহে ছেলের বিয়ে তাও ছুটি পাননি। ফোনেই গিন্নির সাথে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সেরে নিচ্ছিলেন। কথার মাঝে শুভম এসে পড়ায় বাধ্য হয়ে কথা থামাতে হল।হেডস্যার যে যথেষ্ট রাগী সে কথা সব ছাত্ররাই জানে। হারাধনবাবু তাঁর রাগী গম্ভীর গলাতে শুভম কে বললেন!হারাধনবাবু - কি হলো, মাঠে বাঘ বেরিয়েছে নাকি! এমন ছুটতে ছুটতে আসার কি হলো?তখনও হাঁফাচ্ছে শুভম। দুটো ঢোক গিলে মুখ কাঁচুমাচু করে বলে,শুভম - নতুন ছেলেটা....!এইটুকু বলেই থেমে যায় শুভম। নতুন ছেলেটা কি করেছে? এক ধমক লাগান হারাধনবাবু।এবার আঙুল তুলে পুরনো হোস্টেলবাড়িটার দিকে আঙুল তোলে শুভম। বলে ওখানে ঢুকেছে ছেলেটা।আঁতকে ওঠেন হারাধনবাবু। তোরা ছেলেটাকে বলিসনি, ওখানে কারও ঢোকা বারণ আছে।আমরা কেমন করে জানব মাস্টামশাই যে ও ওখানে ঢুকবে। আমরা সবাই মাঠে ফুটবল খেলছিলাম। হঠাৎ দীনেশ খেয়াল করে ছেলেটা দোতলার বারান্দাতে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা সবাই ওকে ওখান থেকে চলে আসতে বললাম কিন্তু ও ভেতরে ঢুকে গেল। এখনও বেরিয়ে আসেনি!হারাধনবাবু আজ প্রায় উনিশ বছর আছেন এই স্কুলে। তখন ঐ বিল্ডিংটাই ছাত্রদের হোস্টেল ছিল। সেবার এক কালবৈশাখী ঝড়ের রাতে বাজ পড়ে হোস্টেলের একটা অংশ পুরো ভেঙে পড়ে। কয়েকজন ছাত্র মারাত্মক রকমের আহত হয়েছিল। মারা গিয়েছিল একজন ছাত্র। মুখটুকু বাদে শরীরের একটা অংশ বিশ্রীভাবে ঝলসে গিয়েছিল পুরো। আজ বারো বছরের বেশি হয়ে গেল, এখনও সেদিনের ঘটনা মনে পড়লে শিউড়ে ওঠেন হারাধনবাবু। তারপর বছর খানেক ঐ বিল্ডিং অমন অবস্থাতেই পড়ে থাকে। হোস্টেলের ছেলেদের স্টাফ কোয়াটার্সে সরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন পর থেকে যতবার ঐ বিল্ডিং সংস্কারের চেষ্টা হয়েছে, একটা না একটা অঘটন ঘটেছে। দোতলা অবধি তো কেউ পৌঁছাতেই পারেনি। শেষ অবধি ভূতুড়ে বিল্ডিং নাম নিয়ে বিল্ডিংটা ভাঙাচোরা অবস্থাতেই পড়ে আছে। ঐ নতুন ছেলেটা তো সদ্য কদিন হলো ক্লাস সিক্সে ভর্তি হয়েছে। ওর বাবা-মা দুজনেই কিভাবে যেন মারা গেছে। জ্যাঠা এসে ভর্তি করে দিয়ে গেছেন। উনি বলেছিলেন অবশ্য, ছেলেটি বড়ো দুরন্ত। কিন্তু এই ক'দিনে তো ছেলেটিকে বেশ চুপচাপই মনে হচ্ছিল। আর ভেবে কি হবে! এখন ভালোয় ভালোয় ঐ ছেলেকে ভূতুড়ে বিল্ডিং থেকে বের করে আনতে পারলে হয়। নাহলে কি কৈফিয়ত দেবেন ওর বাড়ির লোকের কাছে! শুধু কি বাড়ির লোক! পান থেকে চুন খসলেই পার্টি থেকে মিডিয়া, কেউ ঝাঁপিয়ে পড়তে বাকি থাকবে না।স্কুল ছুটির পর প্রতিদিন বিকালেই তো ছেলেরা ঐ মাঠে খেলা করে। ঐ ছেলের এই সন্ধের মুখে ঐ ভাঙা বিল্ডিংএ ঢোকার কি দরকার পড়ল কে জানে আজকালকার ছেলেপিলেগুলোই বড্ড বেয়ারা। আর দেরি না করে শুভমের সাথেই ঐদিকে পা বাড়ায় হারাধনবাবু।অন্য ছেলেরা সব মুখ কাঁচুমাচু করে দূরে দাঁড়িয়ে আছে। হারাধনবাবু বিল্ডিং এর দিকে এগোতে গিয়েও থমকে যান। গতবার এক মিস্ত্রি জোর করে ঢুকেছিল বিল্ডিংএ, ঘরের জিনিসপত্তর বের করে আনবে বলে। কিন্তু কি হলো, সবার চোখের সামনে সুস্থ মানুষটা মুখে রক্ত উঠে মরে গিয়েছিল। ডাক্তার ডাকার সময়টুকু অবধি পাওয়া যায়নি। খানিক পিছিয়ে আসেন হারাধনবাবু।যা তো, স্টাফ কোয়াটার্স থেকে স্যারদের ডেকে নিয়ে আয়। হারাধনবাবু ছাড়াও আর দুজন স্যার থাকেন এখানে। একা কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার থেকে সবাই মিলে ভেবে কাজটা করাই ভালো। হারাধনবাবুর মুখ থেকে কথাটা বের হতে না হতে দুজন ছেলে ছুট লাগায়। হারাধনবাবু হাঁক পাড়েন, রামদীনকেও ডেকে আনবি।স্কুলের দারোয়ান কাম নাইট গার্ড রামদীন। পেটানো চেহারা, ভয়ডরও খুব একটা নেই। এমন সমস্যায় তো রামদীনের মতো মানুষকেই সাথে দরকার।ছেলেটা ভিতরে কি করছে কে জানে! সাড়াশব্দও তো নেই। মরে ফরে গেল না তো!না স্যার মরিনি, এই তো আমি।চমকে ওঠেন হারাধনববাবু। আরে ভূতের মতো দুম করে এ ছেলে উদয় হলো কোথা থেকে? এখনি তো সামনে কেউ ছিলনা। কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে ধমক দিয়েই জিজ্ঞাসা করেন, এই বিল্ডিংএ কেন ঢুকেছিলে! তুমি জানো না এখানে ঢোকা বারণ?কেন স্যার কি হয়েছে এই বিল্ডিং এ?ছেলেটার কথায় কি ছিল কে জানে, কোন প্রতিবাদ করতে পারেন না হারাধনবাবু। তার বদলে সেদিনের সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা ব্যাখ্যা করতে লাগেন।ছেলেটা কি সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিল স্যার?বারো বছর আগের সেই ঝলসানো মৃতদেহটা আবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে হারাধনবাবুর। এতো বছর পরেও যেন ভয়ে শিউড়ে ওঠেন উনি। সামনে দাড়ানো নতুন ছেলেটাকে হাসতে দেখে মাথায় আগুন জ্বলে যায় হারাধনবাবুর। বাজখাঁই গলাতে জিজ্ঞাসা করেন, হাসির কি হলো?ছেলেটা তার পুলওভারটা খুলে ফেলে। দেখুন তো স্যার, এর থেকেও কি বেশি পুড়েছিল?চমকে ওঠেন হারাধনবাবু। কি বীভৎসভাবে পোড়া শরীরের বামদিকটা। এতো সেই বারো বছর আগের বাজ পড়ে ঝলসে যাওয়া ছেলেটাকে দেখছে মনে হচ্ছে। আকাশে মেঘ তো ছিল না, তবু খুব জোরে বিদ্যুতের চমক আর মেঘের গর্জন। কাছাকাছি কোথাও বোধহয় বাজ পড়ল।ভয়ে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে হারাধনবাবুর। উনি পিছন দিকে জোরে ছুটতে লাগেন। ঐ তো বঙ্কিমবাবু আর দয়ালবাবু আসছেন।দয়ালবাবুই জিজ্ঞাসা করেন, ছেলেরা কি বললো, কিছুই তো বুঝতে পারলাম না। কে ঢুকেছে ঐ ভূতুড়ে বিল্ডিং এ?বঙ্কিমবাবু বললেন, ওরা বলছে নতুন ছেলেটা নাকি ঐ ভূতুড়ে বিল্ডিংএ ঢুকেছে?কিন্তু ওর জ্যাঠা আমার মোবাইলে ফোন করেছিলেন, ওর ঠাকুমা অসুস্থ তাই ওকে নিতে আসবেন আগামীকাল। ছেলেটাকে আমার ঘরে ডেকে পাঠিয়ে সেই কথাটাই বলছিলাম। ওতো আমার ঘরেই ছিল।আপনি নিজে দেখেছেন? এই ছেলেদের কথার কোন ঠিক আছে নাকি কি দেখতে কি দেখেছে।আকাশে এমন মেঘ করেছে এখনও খেলা! খেললেই হবে, পড়তে বসতে হবে না! এখনি যে যার ঘরে গিয়ে ইংরাজী বই নিয়ে বসো। আমি দশ মিনিটের মধ্যে যাচ্ছি।দয়ালবাবুর বকুনিতে ছেলেরা সবাই হৈহৈ করতে করতে ফিরে যাচ্ছে হোস্টেলের দিকে।ছেলেরা কি দেখতে কি দেখেছে হতে পারে। কিন্তু হারাধনবাবু একটু আগে নিজের চোখে যা দেখেছেন, তা ভুলবেন কি করে! কিন্তু সেকথা বলতে গেলে কেউ বিশ্বাস করবে না। কাউকে কিছু না বলে ধীর পায়ে নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ান হারাধনবাবু। মনে মনে ঠিক করে ফেলেন, ছুটি না পেলেও কাল সকালেই মেডিকেল লিভ নিয়ে বাড়ি চলে যাবেন।আর মাত্র তিনবছর চাকরি আছে। গিন্নীর কথা মতো, এবার বাড়ির কাছাকাছি ট্রান্সফার নেওয়ার চেষ্টাটা করতেই হবে। -সমাপ্ত- Download Our App