Incomplete letter - 3 in Bengali Love Stories by MOU DUTTA books and stories PDF | অসম্পূর্ণ চিঠি - 3

Featured Books
Categories
Share

অসম্পূর্ণ চিঠি - 3

অজানা ইঙ্গিত

ঈশার মনে এখনও সেই সন্ধ্যার উষ্ণতা বাসা বাঁধছিল। হাতের স্পর্শ, চোখের ভ্রূণশব্দ, অভ্রের হাসি—সবই যেন অদ্ভুতভাবে তার মনকে ধরে রেখেছিল। কিন্তু সে জানত না, সেই মুহূর্তের সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে আরও কিছু—অভ্রর অতীতের অন্ধকার।

পরের দিন কলেজে ঈশা চেষ্টা করছিল নিজের মনকে স্বাভাবিক রাখতে। তবে মন চলে যেত বারবার গান, সেই চোখ, সেই হাসির কাছে। এমন সময় হঠাৎ ক্লাসের মাঝে অভ্র সামনে এসে দাঁড়াল।

“তুমি আজ বেশ চুপচাপ,” অভ্র মৃদু গলায় বলল।
ঈশা কিছু না বলে তার দিকে তাকাল। চোখে কিছুটা বিরক্তি, কিছুটা কৌতূহল।

অভ্রের মুখে সেই দুষ্টু হাসি ভেসে এলো—
“আজকে কি কোনো গল্প পড়ছো না?”
ঈশা হেসে বলল,
“গল্পের মাঝে হারানো আর তুমি—দুটোই একসাথে হয় না।”

অভ্র হেসে এক চিলতে রহস্যময় ইঙ্গিত দিয়ে বলল,
“হয়তো দুটো একসাথে হওয়ার মতো কিছু রহস্য আছে।”

ঈশা চোখ কুঁচকে তাকাল, মনে হলো অভ্র কিছু বলতে চায়, কিন্তু থেমে গেছে। সে এবার ক্লাসে মন দিতে চাইল, তবে মন আর ধরে না। মনে হচ্ছিল—অভ্র তার জীবনেই এক অজানা অধ্যায় লিখতে শুরু করেছে।

সন্ধ্যার পর ঈশা বাড়ি ফিরছিল ট্রেনে। জানালার বাইরে বাতাস বইছিল, পাতা উড়ছিল, আর বুকের ভেতর কেমন অচেনা জ্বালা। ঠিক তখনই ট্রেনের একটি কোণায় অভ্র দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকাচ্ছিল।

“আজও আমি তোমার জন্য গান বানাতে পারতাম,” অভ্র বলল, কণ্ঠে অজানা আক্ষেপ।
ঈশা হেসে বলল,
“আমাকে কল্পনা করতে দাও। বাস্তব তো সবসময় বড়ো কঠিন।”

তারা দু’জনই জানত—মৃদু কথাগুলো কেবল কথার জন্য নয়। যেন লুকানো কিছু বোঝানোর চেষ্টা।

পরদিন, ঈশা ডায়েরিতে লিখছিল—
"আজও অভ্র এসেছে। তার চোখে কিছু আছে যা সে বলছে না। মনে হচ্ছে তার অতীত আমাকে খুঁজে পেতে চায়। আমি কি প্রস্তুত?"

ঠিক সেই সময় ঈশা লক্ষ্য করল, অভ্রর গিটার কেসের পাশে কিছু কাগজ পড়ে আছে। একদম সাদামাটা, কিন্তু কাগজের কোণে অদ্ভুত চিহ্ন। কেউ কি আগে দেখেছে? ঈশার কৌতূহল জাগল। কিন্তু সে আর এগোয়নি—কারণ কিছু জিনিস নিজের হাতে না দেখলে ভালোবাসার গল্পে রহস্য হারিয়ে যায়।

ঈশার মনে অদ্ভুত উত্তেজনা জাগল—ছোট্ট স্পর্শ, অচেনা ইঙ্গিত, রহস্যময় হাসি। মনে হলো—ভালোবাসা শুধু অনুভূতি নয়, আরও কিছুটা কল্পনার খেলা।

সেই রাত ঈশা স্বপ্নে দেখল—একটা অচেনা চিঠি, যা খুলে দেখল না। চিঠির কাগজের কোণ ভাঙা, দাগের রেখা আছে, আর ঠিক মাঝখানে লেখা—"সব সত্যি প্রকাশ হবে একদিন, কিন্তু তুমি কি ধৈর্য রাখবে?"

ঈশা হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। বুকের ভেতর কেমন ঝড়, আর চোখে অজানা অন্ধকার। মনে হলো—অভ্রর সাথে তার সম্পর্ক শুধু দেখা-সাক্ষাৎ নয়, এতে লুকানো আছে আরও অনেক গল্প, রহস্য, যা ধীরে ধীরে বেরোবে।


---
সন্ধ্যার বাতাসে ভেসে এল এক অচেনা গান,
চোখের কোণে আলো, হৃদয়ে কম্পন।
হাতের ছোঁয়া, অদ্ভুত হাসি,
কোথাও যেন এক নতুন গল্পের শুরু।

কলেজের ভিড়ে তোমার চুপচাপ মুখ,
অভ্রর দৃষ্টি এসে ছুঁয়ে যায় বুক।
কথারা যেন ধোঁয়ার মতো উড়ে যায় আকাশে,
অভ্র বলে — “রহস্য আছে, খুঁজে দেখো আশেপাশে।”

ঈশার ডায়রি ভরে ওঠে প্রশ্নে,
প্রতিদিনই এক অচেনা আগুন জ্বলে বুকে।
গিটারের পাশে পড়ে থাকা কাগজ,
কোণে আঁকা চিহ্ন যেন ফিসফিসিয়ে বলে—
“সত্যি এখনো বাকি, ধৈর্য ধরো।”

ট্রেনের জানালায় বাতাস বয়,
পৃথিবীর সমস্ত গল্প একসাথে দোলে।
মনে হয় ভালোবাসা কেবল দেখা নয়,
এ এক কল্পনার খেলা, এক অদ্ভুত যাত্রা।

স্বপ্নে আসে সেই চিঠি—
কাগজের দাগ, কোণের ভাঙা রেখা।
লিখে আছে—
“একদিন সব খুলে যাবে,
কিন্তু তুমি কি অপেক্ষা করতে পারবে?”

ঘুম ভেঙে ঈশা তাকায় রাতের অন্ধকারে,
মনে হয় অভ্রর চোখেই লুকিয়ে আছে উত্তর।
ভালোবাসা শুধু অনুভূতি নয়,
এ এক রহস্য, এক যন্ত্রণার সুর,
যা খুলবে ধীরে ধীরে,
ঠিক যখন সময় হবে প্রস্তুত।
---
গল্পের শেষ পর্যন্ত সঙ্গে থাকার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। 💌 লিখতে গিয়ে কোথাও ভুল হলে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের প্রতিটি মন্তব্য আমার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান, কারণ পাঠকের প্রতিক্রিয়াই লেখকের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আপনারা কীভাবে গল্পটা অনুভব করলেন, কোন অংশ ভালো লেগেছে বা কোথায় আরও ভালো করা যেত—সবটাই জানালে আমার পরবর্তী লেখাগুলোতে নতুন রঙ যোগ হবে। আপনাদের ভালোবাসা আর মতামতই আমার কলমের জ্বালানি। তাই দয়া করে মন্তব্য করতে ভুলবেন না। 🌸