Agle Rekho More - 1 in Bengali Thriller by sari books and stories PDF | আগলে রেখো মোড়ে - 1

The Author
Featured Books
Categories
Share

আগলে রেখো মোড়ে - 1

#আগলে রেখো মোরে
#পর্ব-1

রাত 2:30
আপনি যেই নাম্বারে কল করেছেন সেটি এই মুহূর্তে অন্য কলে ব্যস্ত কিছুক্ষণ পর আবার ট্রাই করুন। ফোন করতে থাকা মেয়েটি 10বার কল করার পরও যখন কল রিসিভ হচ্ছে না তখন ওনলাইনে কল করে সেখানেও দেখাই এনাদার কল ওয়েট।। বারংবার এমন হওয়ায় ফোন টা বিছানায় ছুড়ে ফেলে দুই হাত দিয়ে মাথা চেপ্টা ধরে ভাবতে ব্যস্ত। আসলে বোঝার চেষ্টা করছে হচ্ছেটা কি। বন্ধুদের সাথে বাজী ধরে নতুন সিম কার্ড কিনে সেটা থেকে প্রথম নিজের প্রিয়জনকে কল করে। আসলে এটা করতো না কদিন ধরে ওর বন্ধুরা বারেবারে বলছে ওর প্রিয় মানুষটি ওকে ধোকা দিচ্ছে এই নিয়ে এক পশলা ঝগড়াও হয়ে যায় ওদের সাথে। তারপর ওরা আবার সবকিছু ঠিক করে নেই যতই হোক সেই ছোটবেলার বন্ধু তারা যখন ঠিক করে কথা বলতে পারতো না সেই তখন থেকে তাহলে কিভাবে থাকবে কথা না বলে । তাদের অনেক অনুরোধে যাচাই করার জন্য আজ একটা নতুন কার্ড কিনে ফোন করলো সারাদিন পড়াশোনা, টিউশন, লেখালেখির পর সবে একটু টাইম হল তার। সে বুঝতে পারছেনা তার দুই বছরের ভালোবাসা ঠিক নাকি সতেরো বছরের বন্ধুত্ব।। 
বাইরে ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছে বিশ বছরের তরুণীটি উঠে জানালার কাছে বৃষ্টির মধ্যে দূরের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে আপনমনে। সে এই বিশ বছর জীবনের প্রাপ্তির খাতাটা মেলাতে ব্যার্থ। আপনমনে গুনগুন করছে সে তার খুব পচ্ছন্দ এর গান যেটি গাইলে তার মন খারাপ থাক বা ভালো আরও ভালো হয়ে যায়। 

তারে ধরি ধরি মনে করি
ধরতে গেলেও আর পেলেম না
ধরি ধরি মনে করি
ধরতে গেলেও আর পেলেম না

দেখেছি, দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা
দেখেছি রূপ সাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা............ 
গান গাওয়া শেষে চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছে কাল থেকে যে তার নতুন সংগ্ৰাম শুরু। 

*আসুন জেনে নিই তরুণীটিকে। হ্যাঁ এই আমাদের গল্পের নায়িকা। নাম আমাইরা খান। গায়ের রং হলদে ফরসা। উচ্চতা 5.2"। বয়স কুড়ি বছর। বেশ সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে । জমিদার ছিল তার বাবার পূর্ব পুরুষেরা। তার বাবা একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তার সাথে তাদের নিজস্ব ব্যবসা আছে সেটাও বেশ নাম করা। আমাইরা বাড়ির লোক ও বন্ধুমহলে ইরা নামে পরিচিত। ফ্যাশন ডিজাইনের বার্ষিক বর্ষের ছাত্রী। তারা দুই ভাই বোন । এইটুকু থাক বাকি গল্পটি পড়তে পড়তে জানবেন ।
সকাল 8:30
ইশরে এত দেরি হয়ে গেল কেউ আমাকে ডাকিনী। কলেজ যেতে লেট হয়ে যাবে। যাক এটা নতুন কি আমার সাথে যেখানে কেউ কথা বলে না সেখানে ডেকে দেবে এটা ভাবাই স্বপ্ন দীর্ঘ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে উঠে গেল( ইরা) 
স্নান করে কোনরকম রেডী হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেল না খেয়ে । 
কলেজে 
কিরে করেছিলি কল কালকে? (স্বপ্না) 
এই ওর মুখটা আগে দেখ কেমন শুকিয়ে গেছে নিশ্চয়ই না খেয়ে চলে এসেছে মেয়েটা( দিপ্তী) 
এই চুপ করে তোরা খিদে পেয়েছে ভীষণ চল কিছু খেয়ে নিই সবাই(মাহিদ) 
এই এসে গেছে পেটুক সারাদিন খালি খাই খাই করে। এত খাস কি করে তুই ভাই (স্বপ্না) 
খাবো না তো কি তোর মতো না খেয়ে পাটকাঠি হবো নাকি রে স্বপ্নের দেশ (মাহিদ) 
আবার আবার তুই আমাকে এই নামে ডাকলি (স্বপ্না নেকা কেঁদে বললো) 
এই চুপ করতো নটাঙ্কি। মাথায় থাপ্পড় মেরে বললো (ঋষি) 
তুই লেট লতিফ তুই ভাই চুপ থাক এসেছিস তো দুই ক্লাস পর আবার লেকচার দিচ্ছে (মাহিদ) 
ও ভাই মারো মুঝে মারো একজন কে বললাম অন্যজন এসে আমাকে টাঙ্কি দিচ্ছে। আরে কাল এসাইনমেন্টের জন্য ঘুমাতে দেরি হয়েছে আর উঠতেও। কিছু খাওয়া হয়নি সেজন্য। বলে চোখ দিয়ে ইরা ইশারা করলো (ঋষি)
সবাই দেখল ইরা চুপ করে ক্যান্টিনের বাইরে গাছের দিকে তাকিয়ে বসে আছে এদিকে তার কোন হুশ নেই । 
এই ইরা কি দেখছিস ওদিকে (দিপ্তী) 
কিছু না বল কি বলবি(ইরা) 
কি খাবি বল ওডার দিতে হবে তো (মাহিদ) 
একটা স্যান্ডউইচ আর কফি (ইরা) 
আমাদেরও সেইম (বাকিরা) 
খাওয়ার পর
এইবার বল ইরা (দিপ্তী) 
কি বলবো আমি (ইরা)
কি বলবি মানে কালকে কি হল সেটা বল। সামিম কি তুলেছিল ফোন? (স্বপ্না) 
সবাই উৎসুক চোখে তাকিয়ে আছে ইরার দিকে। ছলছল চোখে তাকাল ইরা সবার দিকে। তার এই অবস্থা দেখে সবাই ব্যস্ত হয়ে পরল। 
এই চুপ কাঁদবিনা একদম কি হয়েছে সেটা বল। (মাহিদ) 
ফোন তুলিনি অন্য কলে ব্যস্ত ছিল কন্ট্যাক্ট প্লাস ওনলাইনেও কল করছিলাম । সকাল থেকে এখান ওবধি কল ব্যাক করেনি (ফুঁপিয়ে কেঁদে বললো ইরা) 
এই ম্যাটার টা কি আমাকে একটু বল প্লিজ। আমি কলেজে আসার আগে নিশা আর সামিম জিজুকে একসাথে বাইকে কোথাও যেতে দেখলাম (ঋষি) 
ঋষির কথা শুনে চার জন অবাক হয়ে তাকল । স্বপ্না আর মাহিদ এক ওপরের দিকে অসহায় চোখে তাকায় । ঠিক এক সপ্তাহ আগে ওর পার্কে সামিম কে একটি মেয়ে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতে দেখেছিল তখন ওখানে দিপ্তীও ছিল কিন্তু ও দেখেনি ওটা কিন্তু বেরোনোর সময় ও সামিমকে দেখে আর স্বপ্না আর মাহিদকে বলে আর তখন মাহিদ ও জানায় সে যেটা দেখে। অনেক ভেবে পরেরদিন ওরা ইরাকে জানায় বিষয়টা তারপর থেকে ওদের সাথে ইরার কথা বন্ধ ছিল অনেক বুঝিয়ে তারপর ওরা নিজেদের ব্যাপার ঠিক করে। তবে ওরা ওকে এটা বলে আমার ভুল দেখতেই পারি তুই তবুও একটু পরিক্ষা করে দেখ সে তোকে কতটা ভালোবাসে। তারপর তো আপনাদের জানা। 

আসলে সামিমকে একদিন আমরা তিনজন পার্কে দেখি একটি মেয়ের সাথে । তারপর যা হয়েছিল সব বললো ঋষিকে (দিপ্তী) 
কি এতো কিছু হয়ে গেল আর তোরা আমাকে কিছু বলিসনী হ্যাঁ রে এই আমি কি এতটাই পর হয়ে গেলাম যে তোরা আমাকে এটা জানালিনা । আর ইরা তুই আমাদের এই চিনলী আমরা কি তোর কোনো খারাপ চাইরে । আমরা সেই ছোট থেকে বেস্টফ্রেন্ড আমরা একসাথে বড়ো হয়েছি সবাই। মাঝে নিশার সাথে বন্ধুত্ব করলি আমাদের দূরে ঠেলে দিলি।। (ঋষি) 
আমি আমার ব্যবহারের জন্য খুবই দুঃখিত। কিন্তু তোরাও বল এখন আমি কি করব। আর নিশা ওর সাথে কি করছে। আমার এখনো মনে হচ্ছে ও আমাকে ঠকাতে পারে না। ও যদি সত্যি ঠকাই আমি শেষ হয়ে যাবোরে। তোরা আমার সব জানিস তো বল।। আমার বেঁচে থাকার কোন মানে হয় না (ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বললো ইরা) 
এক থাপ্পড় খাবি আমাইরু। আমাদের ভালোবাসার কি কোনো মূল্যে নেই তোর কাছে। সামিমের টা সব হয়ে গেল। শোন ওকে ওর শাস্তি দেবো আমরা। এখন মেয়েটা কে সেটা আমাদের আগে জানতে হবে বুঝলি। নিজেকে শক্ত কর কাঁদবিনা আর আমারা সবাই আছি তোর পাশে। (স্বপ্না) 
হ্যাঁ একদম (সবাই একসাথে) 
কথা এখন এই নিশা কে নিয়ে ও কি করছিল সামিমের সাথে। যাইহোক ইরা তুই ওকে কিছু বুঝতে দিবি না বুঝলি যে ওকে আমরা বা তুই সন্দেহ করছিস (দিপ্তী) 
হুম ঠিক আছে। ঠিক বলেছিস তোরা আমি আর কাঁদবো না। তোরা তো আছিস আমাকে শক্ত বানিয়ে দিস। আচ্ছা এবার বাড়ি যায় তোরাও যা (ইরা) 
 ওকে চল টাটা (সবাই একসাথে বললো) 

চলবে...........